রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট:
পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে ঝালকাঠির কাঠালিয়ার বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে জোয়রের পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা পরিষদের অফিস পাড়া, উপজেলা পরিষদ মাঠ, উপজেলা মৎস্য অফিস, হিসাবরক্ষন অফিস, বিআরডিবি, প্রেসক্লাব, শিক্ষা অফিস, আবাসিক এলাকা, ইউএনওর বাস ভবন, হাসপাতাল ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ২০টির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসময় অধিকাংশ অফিস ৪/৫ ঘন্টা পানিবন্ধি হয়ে পড়ে। ব্যাহত হয় অফিসের স্বাভাবিক কাজ কর্ম। উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর ও বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ঘাট পানির নিচে নিমজ্জিত হয়।
এদিকে গত দুই দিনের বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিষখালী নদীর তীরবর্তী আওরাবুনিয়া, জাঙ্গালিয়া, রগুয়ার দড়িরচর, মশাবুনিয়া, শৌলজালিয়া, আমুয়া, হেতালবুনিয়া, বড় কাঠালিয়া, আউরা, ছোনাউটা, ঘোসের হাট, চিংড়াখালী, কচুয়া, সোনার বাংলা, ছিটকীসহ ২০টির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানি বৃদ্ধিতে ভেসে গেছে অনেক পুকুর ও ঘেরের মাছ। তলিয়ে গেছে আমনের বীজ তলা, পানের বরজ, কলা বাগান। বাড়ির আঙ্গিনা, বসতঘর ও রান্না ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় ও অভ্যান্তরীণ রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জন-জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
উপজেলা পরিষদের সামনের কম্পিউটার ব্যবসায়ী লিমন জানান, বেবীবাঁধ না থাকায় প্রতি বছর পূর্ণিমার জোয়ারে উপজেলা পরিষদসহ আমাদের দোকান পাটের সামনে পানিতে তলিয়ে যায়।
বিষখালী নদী পাড়ের বাসিন্দা আলী হোসেন জানান, ঝড়-বন্যা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ আসলে আমারা খুবই আতংকে থাকি। বিশেষ করে রাতে ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে থাকি। কখন বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে নদীতে চলে যায়। দুপুরে হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় খুব বিপদে আছি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, বিষখালী নদীর তীরে বেরিবাঁধ না থাকায় ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে উপজেলা পরিষদ তলিয়ে গেছে। এতে আমাদের মৎস্য অফিসের ৪টি কক্ষে পানি ঢুকে পড়ে। ফলে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়। দিনের বেলায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাকি কাগজপত্র রক্ষা করতে পেরেছি। তাই অতিদ্রæত উপজেলা মৎস্য অফিসের নিচতলা উচু করা দরকার। বিষখালী নদীর তীরে স্থায়ী বেরিবাঁধ হলে সমস্যার সমাধান হবে।
উপজেলা হিসাররক্ষন অফিসের অডিটর মো. মাহফুজুর রহমান জানান, আমাদের দপ্তরটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। প্রতি বছর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে অফিস কক্ষে পানি ঢুকে পড়ে। এতে আমাদের অনেক কাগজপত্র নষ্ঠ হয়ে যায়। তাই অতিদ্রæত আমাদের অফিসটি স্থান্তন্তর করা দরকার। তবে বিষখালী নদীতে বেরিবাঁধ হলে এ সমস্যা অনেকটা দূর হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, বিষখালী নদীর বেরীবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে উপজেলা পরিষদসহ নি¤œাঞ্চল তলিয়ে যায়। ফলে কৃষি উন্নয়ন ও জীবন মানোন্নয়ন ব্যহত হয়। মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দপ্তর দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে বিষখালী নদীর তীরে টেকসই বেরীবাঁধ দিলে এ সমস্যার সমাধান হবে।